Thursday, September 3, 2015

অধ্যাপক রেহমান সোবহানেরই যখন এই অবস্থা

অধ্যাপক রেহমান সোবহানেরই যখন এই অবস্থা

প্রবীণ অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান তার নিজ নতুন বই ফ্রম টু ইকোনমিস টু টু নেশনস মাই জার্নি টু বাংলাদেশ-এর প্রকাশনা অনুষ্ঠানে শনিবার পাকিস্তানি সামরিক শাসন আমলে নিজের লেখালেখির কথা উল্লেখ করে বলেন, 'ওই সব দিনে ফিরে গেলে এটা ভাবিকিভাবে এসব কথা সেদিন বলতাম। এসব কথা বলার সময় ডান-বাম চিন্তা করতাম না। এসব বলতে পারতামকারণ এগুলো ছিল মনে কথা। কিন্তু এখন কোনো লেখা লিখতে গেলে এটি প্রকাশের আগে এক সপ্তাহ লেগে যায় এবং ৫ বার পড়তে হয়। স্বাধীন বাংলাদেশের অন্য সবার মতো আমাকে আজকাল প্রতিটি শব্দ ব্যবহার নিয়ে ভাবতে হয়। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং পাকিস্তানের শাসন আমলে আমরা টেবিলে বসেই দুই ঘন্টায় যেকোনো কিছু লিখতে পারতাম'।
অধ্যাপক রেহমান সোবহান অতি পরিচিত প্রখ্যাত একজন ব্যক্তিত্ব। দুই পাকিস্তানের বৈষম্য নিয়ে অন্য স্বল্পসংখ্যকের সাথে পাকিস্তান সামরিক শাসনের মধ্যেই তিনি লিখেছেনবলেছেন। কিন্তু তাকে নিজ থেকে নিয়ন্ত্রণ বা সেলফ সেন্সরশিপ নিয়ে তখন ভাবতে হতো না। বাংলাদেশ নামক ভূখন্ডটি স্বাধীন হওয়ার এতোকাল পরে এসে তাকে শব্দ প্রয়োগ নিয়েও ভাবতে হচ্ছে। আর এ কথা তিনি প্রকাশ্যে স্বীকার করলেন এবং সবার সামনে তার অসহায়ত্বের কথাই প্রকাশ করেছেন। তাহলে পরিস্থিতি কি এতোটাই খারাপ হয়েছেঅন্যান্য অনেকের মতো অধ্যাপক রেহমান সোবহানের বক্তব্যে তার প্রতিফলন দেখা যায়। অধ্যাপক রেহমান সোবহানের বক্তব্যেই স্পষ্ট হয় কি দমবন্ধ করা পরিস্থিতির মুখোমুখি এখন আমরা।
এ কথা ভুলে গেলে চলবে নাবাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ক্রমাগতভাবে তার পরিণতির দিকে এগিয়ে যায় প্রথমতসামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন এবং এ থেকে সৃষ্ট উত্থাল গণজোয়ারের মধ্যে গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় নিয়ে। মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনাই ছিল একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামো কায়েম হবে এবং বিদ্যমান থাকবে এমন আকাঙ্খা। নতুন একটি দেশ হওয়ার পরে যে সংবিধান আমরা পেয়েছিলাম সেখানে মানুষের বাক-ব্যক্তিচিন্তা-বিবেকের স্বাধীনতাসভা-সমাবেশের অধিকারসহ সব মৌলিক অধিকারগুলোকে খুবই গুরুত্বের সাথে সন্নিবেশিত করা হয়েছিল। সংবিধান প্রণয়নের স্বল্পকাল পরেই মানুষের অধিকারসহ গণতান্ত্রিক প্রথা-প্রতিষ্ঠানগুলোকে একে একে বিলোপ করা হতে থাকে। বাস্তবে দেশটি আবার আগের পরিস্থিতিতেই ফিরে যেতে শুরু করে। এরপর থেকে যতো শাসকের শাসন এসেছে কমবেশি তারা সবাই ওই একই দোষে-দুষ্ট ছিলেন।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরে মানুষের ন্যূনতম যে অধিকারগুলো তাও অগ্রাহ্য করা হয়। বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডঅপহরণগুমখুনসন্ত্রাসচাদাবাজিব্যাংক ও শেয়ারবাজার লুটসহ এমন এক পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয় যাতে মানুষ বিপন্ন বোধ করতে থাকে। অন্যদিকে বিরোধী মতপথপক্ষ ও দলকে নিশ্চিহ্ন করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়। ভোটের ন্যূনতম যে অধিকার এতোদিন চালু ছিল তাও এখন আর নেই। অধ্যাপক রেহমান সোবহান ঠিকই বলেছেন,এখন কিছু লিখতে গেলে সাত দিন চিন্তা করতে হয়পাচ বার পড়তে হয়। চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার বিপক্ষে তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা প্রণয়ন ও প্রয়োগ করা হচ্ছে এখন।
তবে এসব বাধা-নিষেধে দীর্ঘমেয়াদে কি কোনো কার্যকর ফললাভ সম্ভববিশ্ব খ্যাত গণমানুষের ইতিহাসবিদ বা পিপলস হিস্টোরিয়ান হাওয়ার্ড জিন বলেছেনমানুষের চিন্তা ও বিবেককে কখনো বন্দি বা আটক করা যায় না।
কিন্তু ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছেসব কিছুই যথার্থভাবে চলছে। দেশের উন্নয়নের কথা জোর গলায় বলা হচ্ছে। ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে এও বলা হচ্ছে যেপ্রয়োজনীয় মাত্রায় গণতন্ত্র বিদ্যমান। কিন্তু আসলে বিদ্যমান পরিস্থিতি কি তাইযেকোনো বোধ-বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষই বুঝতে পারছেন পরিস্থিতি কেমন রয়েছে। আর এ কারণেই বয়োবৃদ্ধ অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহানকেও এখন বলতে হচ্ছে তার উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার কথা। অধ্যাপক রেহমান সোবহানেরই যদি এই অবস্থা হয়তাহলে আমজনতার অবস্থাটি কি তা সহজেই অনুমান করা যায়।।
 
 
image
 
 
 
 
 
অধ্যাপক রেহমান সোবহানেরই যখন এই অবস্থা
আমীর খসরু প্রবীণ অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান তার নিজ নতুন বই ফ্রম টু ইকোনমিস টু টু নেশনস : মাই জার্নি টু বাংলাদেশ-এর প্রকাশনা অনুষ্ঠানে শনিবার পাকিস্তানি সামর...
Preview by Yahoo
 

__._,_.___

--
Pl see my blogs;


Feel free -- and I request you -- to forward this newsletter to your lists and friends!

No comments:

Post a Comment