অবগুণ্ঠন উন্মোচন / আসিফ আরসালান
ভারতের মিয়ানমার অপারেশন
মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ভারতীয় কমান্ডো বাহিনীর ঝটিকা হামলা নিয়ে একদিকে যেমন বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে অন্য দিকে তেমনি এই উপমহাদেশে নতুন করে স্নায়ু যুদ্ধ সৃষ্টি করেছে। গত বৃহস্পতিবার ভারতীয় হামলার খবর বাংলাদেশের পত্রপত্রিকায় যেভাবে পরিবেশিত হয় এবং ভারতের যে সুর ধ্বনিত হয়, শনিবারে এসে তার পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনুরূপভাবে মিয়ানমার গত বুধবার বিষয়টিকে যেভাবে গ্রহণ করেছিল, শনিবার সেখান থেকে তার অবস্থান পরিবর্তন করেছে। গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ভারতীয় বিমান বাহিনীর ছত্রছায়ায় ভারতীয় বাহিনীর হামলার খবর যেভাবে প্রকাশিত হয় সেটি নিম্নরূপ:
গত মঙ্গলবার মিয়ানমার সরকারকে কোনো কিছু না জানিয়ে বিদ্রোহীদের ঘাঁটি ধ্বংসের অজুহাতে রাত ৩ টায় মিয়ানমার সীমান্তের কয়েক কিলোমিটার অভ্যন্তরে সামরিক অভিযান চালায় ভারতীয় সেনাবাহিনী। তাদের মাথার ওপরে ছত্রছায়ার মতো চক্কর দেয় ভারতীয় বিমান বাহিনীর 'সুখই' জঙ্গি হেলিকপ্টার এবং 'মিগ-২৯' জঙ্গি বিমান। ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডোরা সকাল পর্যন্ত অভিযান চালায়। এই সামরিক অভিযানের সময় আকাশ এবং স্থল থেকে মিয়ানমারের দুটি স্থানে অবিরাম গুলী বর্ষণ করা হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা অপারেশন করে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ২১ প্যারা রেজিমেন্টের কমান্ডোরা নিরাপদে ফিরে আসে। ভারতীয় বাহিনীর হামলায় অন্তত শতাধিক ব্যক্তি নিহত হয়। ভারতের তথ্য প্রতিমন্ত্রী রাজ্য বর্ধন সিং রাঠোর স্থানীয় এক টেলিভিশনে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ঢোকার খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্দেশে সেনাবাহিনীর পরিকল্পনায় 'গুরুত্বপূর্ণ, অভূতপূর্ব ও সাহসী' অভিযানটি চালানো হয়। রাজ্য বর্ধন সিং রাঠোর বলেন, এ হামলার মধ্য দিয়ে একটি বক্তব্য স্পষ্ট করা হয়েছে যে, ভারত একটি শক্তিশালী দেশ এবং ভারতের ওপর কোনো হামলা বরদাশত করা হবে না। যেসব প্রতিবেশী দেশে সন্ত্রীদের ঘাঁটি রয়েছে প্রয়োজনে সেখানেও হামলা চালানো হবে। এমনকি ইরাক, ইয়েমেন কিংবা বিশ্বের যে কোনো প্রান্তেও ভারতীয়দের ওপর হামলা মেনে নেয়া হবে না।
ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্র মতে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহযোগিতা দিচ্ছে চীন। সাম্প্রতিক একটি গোয়েন্দা তথ্য মোতাবেক, উলফা নেতা পরেশ বড়ুয়া চীনের ইউনান প্রদেশে আশ্রয় চেয়েছেন। এছাড়া, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এ খবরও আসছিল যে, চীনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় পরেশ বড়–য়ার উলফা ও আরেক বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন এনএসসিএনসহ মোট ৭টি সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন মিলে গঠন করেছে 'ইউনাইটেড ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট অব ওয়েস্টার্ন সাউথ-ইস্ট এশিয়া' নামের একটি সংগঠন। মণিপুরে ৪ জুনের একটি হামলায় ১৮ ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছে বলে বলা হয়েছে। সেখানে সন্ত্রাসীরা অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ করছে ভারত।
গত বৃহস্পতিবারের পত্রপত্রিকা অনুযায়ী মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ভারতীয় বাহিনীর অভিযানের খবর মিয়ানমার সরকার অস্বীকার করে।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, মিয়ানমারের ভেতরে ঢুকে ভারতীয় বাহিনীর অভিযান চালানো কিংবা জঙ্গি বাহিনীর অভিযান চালানোর মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে বুধবার দাবি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্টের দফতরের মুখপাত্র জাও হাটি। তিনি বলেন, ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে ভারতে দেশটির সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়েছে। তবে মিয়ানমার কখনোই এমন কোনো কার্যক্রম মেনে নেবে না, যাতে বাইরের কেউ মিয়ানমারে প্রবেশ করে প্রতিবেশী দেশের ওপর হামলা চালায় বা এমন কিছু করে যাতে সীমান্তে সমস্যার সৃষ্টি হয়। তিনি আরও বলেন, গত সপ্তাহে সেনাবাহিনীর ওপর হামলা চালানোর ঘটনা আমাদের জানিয়েছিল ভারত।
"দুই"
কিন্তু শনিবার মিয়ানমার সরকারের সুর সম্পূর্ণ পাল্টে যায়। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ভারতীয় কমান্ডোদের কথিত সামরিক অভিযানের খবরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নে পি দো। মিয়ানমার বলেছে, তার ভূখন্ডে কোনো বিদেশী সামরিক অভিযান মেনে নেওয়া হবে না। অন্য দেশগুলোর উচিত তাদের সার্বভৌমত্বকে শ্রদ্ধা করা। বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতের 'দ্য হিন্দু' পত্রিকা জানিয়েছে, গত বুধবার মিয়ানমারে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত গৌতম মুখার্জির সঙ্গে দেশটির কর্তৃপক্ষের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় মিয়ানমার কড়া ভাষায় ভারতের হামলার প্রতিবাদ জানায়।
এদিকে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের পরিচালক জও তে নে পি দো টেলিফোনে কলকাতা টেলিগ্রাফকে বলেছেন, 'আমরা মিয়ানমারের ভূখন্ডে কোনো বিদেশী সেনা অভিযান মেনে নেব না এবং আমি বলতে চাই, প্রত্যেক দেশকে অবশ্যই অন্য দেশের সার্বভৌমত্বকে শ্রদ্ধা করা উচিত।'
শুক্রবার থেকেই বিজেপি এবং সরকারি নেতারা গলার স্বর নামিয়ে ফেলতে শুরু করে। কারণ এই হামলাকে নিয়ে বিজেপি এবং সরকারি নেতারা যে আস্ফালন শুরু করেন এবং ক্ষমতার দম্ভ নিয়ে যে বাগাড়ম্বর শুরু করেন তার বিরুদ্ধে বিদেশে তো বটেই, খোদ ভারতের অভ্যন্তরেই সরকারের তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। গত ১১ জুন বৃহস্পতিবার ভারতীয় কংগ্রেস বিজেপি সরকারের যুদ্ধংদেহী আচরণ ও উক্তির কঠোর সমালোচনা করে। তারা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বলে যে, আপনার কিছু কিছু মন্ত্রী যুদ্ধবাজ আচরণ করছেন এবং ভারতের সামরিক শক্তি নিয়ে দম্ভোক্তি করছেন। তাদেরকে সামলান এবং নসিহৎ করুন। কংগ্রেসের মুখপাত্র আনন্দ শর্মা বলেন, দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করা ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর অভ্যেসে পরিণত হয়েছে। এমন দায়িত্বশীল পদে অধিষ্ঠিত থাকলে তাদেরকে অমায়িক এবং পরিপক্ব হতে হয়। এই ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন দম্ভোক্তি ভারতের বিশেষ বাহিনীর অপারেশনকে কোনভাবেই সাহায্য করে না। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনোহর পারিকার বলেছেন যে, মিয়ানমার অপারেশনের মাধ্যমে ভারতের রাজনৈতিক মন মানসিকতার পরিবর্তন প্রকাশিত হয়েছে। তিনি পাকিস্তানের দিকে ঈঙ্গিত করে বলেন যে, যারা ভারতের এই নতুন মানসিকতাকে ভয় পায় তারা এখন ভয় পেয়ে এসব প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। তথ্য প্রতিমন্ত্রী রাজ্য বর্ধন রাঠোরের স্পর্ধিত উক্তির পর প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর এই বক্তব্য পাওয়া গেল। উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ডঃ মনমোহোন সিংয়ের বিগত কংগ্রেস সরকারে একজন সিনিয়র মন্ত্রী ছিলেন আনন্দ শর্মা। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে কথা বলার সময় সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানান মিঃ শর্মা। তার কথা বলার স্টাইল শিষ্টাচারের সীমা লঙ্ঘংন করে। শর্মা বলেন যে, এই ধরনের বিশেষ অপারেশন, বিশেষ করে যেখানে ভারতের প্রতিবেশীরা জড়িত, সেখানে এই সব উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কথা বলার সময় বিনয় এবং পরিপক্বতা থাকা উচিত। তার মতে পাকিস্তান সম্পর্কে যে উক্তি করা হয়েছে সেটি ভারতের বিরুদ্ধে বৈরী নীতি গ্রহণে পাকিস্তানকে ঠেলে দিয়েছে। সে জন্যেই পাকিস্তান ভারতকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছে যে, পাকিস্তান মিয়ানমার নয়।
বিদেশী একাধিক বার্তা সংস্থা ইন্ডিয়ার এই অস্বাভাবিক কঠোরতাকে আমেরিকার পূর্বাহ্নিক আক্রমণতত্ত্বের সাথে (Doctrine of pre-emptive strike) তুলনা করেছেন। উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ভবিষ্যতে আমেরিকার নিরাপত্তা বিপন্ন হতে পারে, এই অজুহাতে আফগানিস্তান এবং ইরাক আক্রমণ করে ও দখল করে নেয় আমেরিকা এবং পশ্চিমা যৌথ বাহিনী। ভারতের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ এই মর্মে পরামর্শ দিয়েছেন যে, ভারতের অভিন্ন প্রতিবেশী যদি এইভাবে সন্ত্রাসী এবং জঙ্গি তৎপরতাকে প্রশ্রয় দেয় তাহলে ভারত তার সীমান্ত অতিক্রম করে সেই দেশে হামলা চালাতে পারে। এই ব্যাপারে পাকিস্তান খুবই স্পর্শকাতর। কারণ 'নেভী সিল' নামক মার্কিন নৌ বাহিনীর একটি কমান্ডো ইউনিট পাকিস্তানকে কিছু না জানিয়ে অকস্মাৎ পাকিস্তানের সীমান্ত লংঙ্ঘন করে এবং পাকিস্তানের এবোটাবাদ এসে ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করে চলে যায়। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী নিছার আলী খান মনে করেন যে, ভারতের রয়েছে অশুভ উদ্দেশ্য। তবে ভারতের যে কোন হঠকারী অভিযানের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়ার জন্য পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী প্রস্তুত।
"তিন"
যতই দিন যাচ্ছে ততই দেখা যাচ্ছে যে, ভারতীয় মন্ত্রীদের হঠকারী উক্তির ফলে পাক-ভারত সম্পর্ক আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। দীর্ঘ দিন ধরে চির বৈরী দেশ দুটির মধ্যে মোটামুটি একটি স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছিল। কিন্তু ভারতের মন্ত্রীদের উস্কানিমূলক উক্তি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকেও কড়া বক্তব্য দিতে বাধ্য করেছে। পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল রাহিল শরীফ বলেছেন, ভারতের রাজনীতিকরা যেন তার দেশের দিকে কুদৃষ্টিতে না তাকান। তিনি বলেন, যেকোনো মূল্যে পাকিস্তান ভারতীয় নেতাদের ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করবে এবং নিজের অখন্ডতা রক্ষা করবে। রাওয়ালপিন্ডির সেনা সদরে সামরিক বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের এক বৈঠকে জেনারেল রাহিল শরীফ এই হুঁশিয়ারি দেন। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, পাকিস্তানের দিকে কেউ যেন বদনজরে না তাকায় এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোনো হঠকারী অভিযান চালানোর চিন্তাও না করে।
"চার"
ভারতের নেতাদের বক্তব্যকে 'দায়িত্বজ্ঞানহীন ও হঠকারী' বলে মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। রেডিও পাকিস্তানের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিতে গিয়ে বৃহস্পতিবার নওয়াজ শরিফ আরও বলেন, ভারতের নেতাদের এ ধরনের বক্তব্য আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার পরিবেশকে নস্যাৎ করছে। সেই সঙ্গে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার অঙ্গীকার থেকে প্রতিবেশী দুটি দেশকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে। যে কোন মূল্যে পাকিস্তানের স্বার্থ সমুন্নত রাখার অঙ্গীকারও ব্যক্ত করেন নওয়াজ। এর আগে বাংলাদেশ সফরে এসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দেওয়া বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে পাকিস্তান পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব পাস করা হয়েছে। নওয়াজ বলেন, ভারতের মন্ত্রীদের সাম্প্রতিক বক্তব্যে পুরো পাকিস্তান ফুঁসে উঠেছে। যে কোনো মূল্যে আমরা নিজেদের মৌলিক স্বার্থ রক্ষা করব। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, অতীতে বহিরাগতদের লেলিয়ে দেয়া সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের কারণে পাকিস্তানের শান্তি বিনষ্ট হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে 'পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদকে উৎসাহিত করছে'- ঢাকা সফরের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এ মন্তব্যের নিন্দা জানিয়ে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে প্রস্তাব পাস করা হয়েছে। প্রস্তাবে ভারতের 'কর্তৃত্বপরায়ণ' মনোভাবের কড়া সমালোচনা করা হয়। পাকিস্তানের ভূখন্ডে ভারতের যে কোন প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইসলামাবাদ মেনে নেবে না বলেও সতর্ক করা হয়। সতর্ক করে বলা হয়, পাকিস্তানের ভূখন্ডে ভারতের যে কোনো হামলা চেষ্টার কড়া জবাব দেবে পাকিস্তান সেনা বাহিনী। ভারতের সেনা বাহিনীর এ ধরনের আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে সতর্ক করা হয়। পাকিস্তানের সাবেক সেনা প্রধান ও প্রেসিডেন্ট জেনারেল (অবঃ) পারভেজ মোশাররফ বলেন, শবে বরাতে ফোটানোর জন্য পাকিস্তান আণবিক বোমা তৈরি করেনি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হামলা হলে তার দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া হবে।
দেখা যাচ্ছে যে, ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ এশিয়ার পূর্ব প্রান্তে আর অশান্ত ও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পশ্চিম প্রান্ত। যদিও মিয়ানমার অস্বীকার করেছে, তারপরেও বলব, যদি মিয়ানমার বর্ডার থেকে এসে ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালানো হয় তাহলে সেটি গ্রহণযোগ্য হবে না। কিন্তু সেই অছিলায় ভারত যদি কোনো মিলিটারি এ্যাডভেঞ্চার করতে চায় তাহলে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়া যুদ্ধের ময়দানে পরিণত হবে। বলা হয় যে, নরেন্দ্র মোদি হৃদয়ে নাকি বদলে যাচ্ছেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে যে, একজন বিশ্ব নেতা হওয়ার জন্য নরেন্দ্র মোদি কঠোর থেকে কঠোরতর হচ্ছেন।
Email: asifarsalan15@gmail.com
গত মঙ্গলবার মিয়ানমার সরকারকে কোনো কিছু না জানিয়ে বিদ্রোহীদের ঘাঁটি ধ্বংসের অজুহাতে রাত ৩ টায় মিয়ানমার সীমান্তের কয়েক কিলোমিটার অভ্যন্তরে সামরিক অভিযান চালায় ভারতীয় সেনাবাহিনী। তাদের মাথার ওপরে ছত্রছায়ার মতো চক্কর দেয় ভারতীয় বিমান বাহিনীর 'সুখই' জঙ্গি হেলিকপ্টার এবং 'মিগ-২৯' জঙ্গি বিমান। ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডোরা সকাল পর্যন্ত অভিযান চালায়। এই সামরিক অভিযানের সময় আকাশ এবং স্থল থেকে মিয়ানমারের দুটি স্থানে অবিরাম গুলী বর্ষণ করা হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা অপারেশন করে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ২১ প্যারা রেজিমেন্টের কমান্ডোরা নিরাপদে ফিরে আসে। ভারতীয় বাহিনীর হামলায় অন্তত শতাধিক ব্যক্তি নিহত হয়। ভারতের তথ্য প্রতিমন্ত্রী রাজ্য বর্ধন সিং রাঠোর স্থানীয় এক টেলিভিশনে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ঢোকার খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্দেশে সেনাবাহিনীর পরিকল্পনায় 'গুরুত্বপূর্ণ, অভূতপূর্ব ও সাহসী' অভিযানটি চালানো হয়। রাজ্য বর্ধন সিং রাঠোর বলেন, এ হামলার মধ্য দিয়ে একটি বক্তব্য স্পষ্ট করা হয়েছে যে, ভারত একটি শক্তিশালী দেশ এবং ভারতের ওপর কোনো হামলা বরদাশত করা হবে না। যেসব প্রতিবেশী দেশে সন্ত্রীদের ঘাঁটি রয়েছে প্রয়োজনে সেখানেও হামলা চালানো হবে। এমনকি ইরাক, ইয়েমেন কিংবা বিশ্বের যে কোনো প্রান্তেও ভারতীয়দের ওপর হামলা মেনে নেয়া হবে না।
ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্র মতে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহযোগিতা দিচ্ছে চীন। সাম্প্রতিক একটি গোয়েন্দা তথ্য মোতাবেক, উলফা নেতা পরেশ বড়ুয়া চীনের ইউনান প্রদেশে আশ্রয় চেয়েছেন। এছাড়া, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এ খবরও আসছিল যে, চীনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় পরেশ বড়–য়ার উলফা ও আরেক বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন এনএসসিএনসহ মোট ৭টি সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন মিলে গঠন করেছে 'ইউনাইটেড ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট অব ওয়েস্টার্ন সাউথ-ইস্ট এশিয়া' নামের একটি সংগঠন। মণিপুরে ৪ জুনের একটি হামলায় ১৮ ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছে বলে বলা হয়েছে। সেখানে সন্ত্রাসীরা অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ করছে ভারত।
গত বৃহস্পতিবারের পত্রপত্রিকা অনুযায়ী মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ভারতীয় বাহিনীর অভিযানের খবর মিয়ানমার সরকার অস্বীকার করে।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, মিয়ানমারের ভেতরে ঢুকে ভারতীয় বাহিনীর অভিযান চালানো কিংবা জঙ্গি বাহিনীর অভিযান চালানোর মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে বুধবার দাবি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্টের দফতরের মুখপাত্র জাও হাটি। তিনি বলেন, ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে ভারতে দেশটির সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়েছে। তবে মিয়ানমার কখনোই এমন কোনো কার্যক্রম মেনে নেবে না, যাতে বাইরের কেউ মিয়ানমারে প্রবেশ করে প্রতিবেশী দেশের ওপর হামলা চালায় বা এমন কিছু করে যাতে সীমান্তে সমস্যার সৃষ্টি হয়। তিনি আরও বলেন, গত সপ্তাহে সেনাবাহিনীর ওপর হামলা চালানোর ঘটনা আমাদের জানিয়েছিল ভারত।
"দুই"
কিন্তু শনিবার মিয়ানমার সরকারের সুর সম্পূর্ণ পাল্টে যায়। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ভারতীয় কমান্ডোদের কথিত সামরিক অভিযানের খবরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নে পি দো। মিয়ানমার বলেছে, তার ভূখন্ডে কোনো বিদেশী সামরিক অভিযান মেনে নেওয়া হবে না। অন্য দেশগুলোর উচিত তাদের সার্বভৌমত্বকে শ্রদ্ধা করা। বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতের 'দ্য হিন্দু' পত্রিকা জানিয়েছে, গত বুধবার মিয়ানমারে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত গৌতম মুখার্জির সঙ্গে দেশটির কর্তৃপক্ষের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় মিয়ানমার কড়া ভাষায় ভারতের হামলার প্রতিবাদ জানায়।
এদিকে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের পরিচালক জও তে নে পি দো টেলিফোনে কলকাতা টেলিগ্রাফকে বলেছেন, 'আমরা মিয়ানমারের ভূখন্ডে কোনো বিদেশী সেনা অভিযান মেনে নেব না এবং আমি বলতে চাই, প্রত্যেক দেশকে অবশ্যই অন্য দেশের সার্বভৌমত্বকে শ্রদ্ধা করা উচিত।'
শুক্রবার থেকেই বিজেপি এবং সরকারি নেতারা গলার স্বর নামিয়ে ফেলতে শুরু করে। কারণ এই হামলাকে নিয়ে বিজেপি এবং সরকারি নেতারা যে আস্ফালন শুরু করেন এবং ক্ষমতার দম্ভ নিয়ে যে বাগাড়ম্বর শুরু করেন তার বিরুদ্ধে বিদেশে তো বটেই, খোদ ভারতের অভ্যন্তরেই সরকারের তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। গত ১১ জুন বৃহস্পতিবার ভারতীয় কংগ্রেস বিজেপি সরকারের যুদ্ধংদেহী আচরণ ও উক্তির কঠোর সমালোচনা করে। তারা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বলে যে, আপনার কিছু কিছু মন্ত্রী যুদ্ধবাজ আচরণ করছেন এবং ভারতের সামরিক শক্তি নিয়ে দম্ভোক্তি করছেন। তাদেরকে সামলান এবং নসিহৎ করুন। কংগ্রেসের মুখপাত্র আনন্দ শর্মা বলেন, দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করা ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর অভ্যেসে পরিণত হয়েছে। এমন দায়িত্বশীল পদে অধিষ্ঠিত থাকলে তাদেরকে অমায়িক এবং পরিপক্ব হতে হয়। এই ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন দম্ভোক্তি ভারতের বিশেষ বাহিনীর অপারেশনকে কোনভাবেই সাহায্য করে না। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনোহর পারিকার বলেছেন যে, মিয়ানমার অপারেশনের মাধ্যমে ভারতের রাজনৈতিক মন মানসিকতার পরিবর্তন প্রকাশিত হয়েছে। তিনি পাকিস্তানের দিকে ঈঙ্গিত করে বলেন যে, যারা ভারতের এই নতুন মানসিকতাকে ভয় পায় তারা এখন ভয় পেয়ে এসব প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। তথ্য প্রতিমন্ত্রী রাজ্য বর্ধন রাঠোরের স্পর্ধিত উক্তির পর প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর এই বক্তব্য পাওয়া গেল। উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ডঃ মনমোহোন সিংয়ের বিগত কংগ্রেস সরকারে একজন সিনিয়র মন্ত্রী ছিলেন আনন্দ শর্মা। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে কথা বলার সময় সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানান মিঃ শর্মা। তার কথা বলার স্টাইল শিষ্টাচারের সীমা লঙ্ঘংন করে। শর্মা বলেন যে, এই ধরনের বিশেষ অপারেশন, বিশেষ করে যেখানে ভারতের প্রতিবেশীরা জড়িত, সেখানে এই সব উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কথা বলার সময় বিনয় এবং পরিপক্বতা থাকা উচিত। তার মতে পাকিস্তান সম্পর্কে যে উক্তি করা হয়েছে সেটি ভারতের বিরুদ্ধে বৈরী নীতি গ্রহণে পাকিস্তানকে ঠেলে দিয়েছে। সে জন্যেই পাকিস্তান ভারতকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছে যে, পাকিস্তান মিয়ানমার নয়।
বিদেশী একাধিক বার্তা সংস্থা ইন্ডিয়ার এই অস্বাভাবিক কঠোরতাকে আমেরিকার পূর্বাহ্নিক আক্রমণতত্ত্বের সাথে (Doctrine of pre-emptive strike) তুলনা করেছেন। উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ভবিষ্যতে আমেরিকার নিরাপত্তা বিপন্ন হতে পারে, এই অজুহাতে আফগানিস্তান এবং ইরাক আক্রমণ করে ও দখল করে নেয় আমেরিকা এবং পশ্চিমা যৌথ বাহিনী। ভারতের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ এই মর্মে পরামর্শ দিয়েছেন যে, ভারতের অভিন্ন প্রতিবেশী যদি এইভাবে সন্ত্রাসী এবং জঙ্গি তৎপরতাকে প্রশ্রয় দেয় তাহলে ভারত তার সীমান্ত অতিক্রম করে সেই দেশে হামলা চালাতে পারে। এই ব্যাপারে পাকিস্তান খুবই স্পর্শকাতর। কারণ 'নেভী সিল' নামক মার্কিন নৌ বাহিনীর একটি কমান্ডো ইউনিট পাকিস্তানকে কিছু না জানিয়ে অকস্মাৎ পাকিস্তানের সীমান্ত লংঙ্ঘন করে এবং পাকিস্তানের এবোটাবাদ এসে ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করে চলে যায়। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী নিছার আলী খান মনে করেন যে, ভারতের রয়েছে অশুভ উদ্দেশ্য। তবে ভারতের যে কোন হঠকারী অভিযানের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়ার জন্য পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী প্রস্তুত।
"তিন"
যতই দিন যাচ্ছে ততই দেখা যাচ্ছে যে, ভারতীয় মন্ত্রীদের হঠকারী উক্তির ফলে পাক-ভারত সম্পর্ক আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। দীর্ঘ দিন ধরে চির বৈরী দেশ দুটির মধ্যে মোটামুটি একটি স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছিল। কিন্তু ভারতের মন্ত্রীদের উস্কানিমূলক উক্তি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকেও কড়া বক্তব্য দিতে বাধ্য করেছে। পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল রাহিল শরীফ বলেছেন, ভারতের রাজনীতিকরা যেন তার দেশের দিকে কুদৃষ্টিতে না তাকান। তিনি বলেন, যেকোনো মূল্যে পাকিস্তান ভারতীয় নেতাদের ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করবে এবং নিজের অখন্ডতা রক্ষা করবে। রাওয়ালপিন্ডির সেনা সদরে সামরিক বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের এক বৈঠকে জেনারেল রাহিল শরীফ এই হুঁশিয়ারি দেন। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, পাকিস্তানের দিকে কেউ যেন বদনজরে না তাকায় এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোনো হঠকারী অভিযান চালানোর চিন্তাও না করে।
"চার"
ভারতের নেতাদের বক্তব্যকে 'দায়িত্বজ্ঞানহীন ও হঠকারী' বলে মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। রেডিও পাকিস্তানের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিতে গিয়ে বৃহস্পতিবার নওয়াজ শরিফ আরও বলেন, ভারতের নেতাদের এ ধরনের বক্তব্য আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার পরিবেশকে নস্যাৎ করছে। সেই সঙ্গে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার অঙ্গীকার থেকে প্রতিবেশী দুটি দেশকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে। যে কোন মূল্যে পাকিস্তানের স্বার্থ সমুন্নত রাখার অঙ্গীকারও ব্যক্ত করেন নওয়াজ। এর আগে বাংলাদেশ সফরে এসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দেওয়া বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে পাকিস্তান পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব পাস করা হয়েছে। নওয়াজ বলেন, ভারতের মন্ত্রীদের সাম্প্রতিক বক্তব্যে পুরো পাকিস্তান ফুঁসে উঠেছে। যে কোনো মূল্যে আমরা নিজেদের মৌলিক স্বার্থ রক্ষা করব। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, অতীতে বহিরাগতদের লেলিয়ে দেয়া সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের কারণে পাকিস্তানের শান্তি বিনষ্ট হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে 'পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদকে উৎসাহিত করছে'- ঢাকা সফরের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এ মন্তব্যের নিন্দা জানিয়ে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে প্রস্তাব পাস করা হয়েছে। প্রস্তাবে ভারতের 'কর্তৃত্বপরায়ণ' মনোভাবের কড়া সমালোচনা করা হয়। পাকিস্তানের ভূখন্ডে ভারতের যে কোন প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইসলামাবাদ মেনে নেবে না বলেও সতর্ক করা হয়। সতর্ক করে বলা হয়, পাকিস্তানের ভূখন্ডে ভারতের যে কোনো হামলা চেষ্টার কড়া জবাব দেবে পাকিস্তান সেনা বাহিনী। ভারতের সেনা বাহিনীর এ ধরনের আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে সতর্ক করা হয়। পাকিস্তানের সাবেক সেনা প্রধান ও প্রেসিডেন্ট জেনারেল (অবঃ) পারভেজ মোশাররফ বলেন, শবে বরাতে ফোটানোর জন্য পাকিস্তান আণবিক বোমা তৈরি করেনি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হামলা হলে তার দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া হবে।
দেখা যাচ্ছে যে, ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ এশিয়ার পূর্ব প্রান্তে আর অশান্ত ও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পশ্চিম প্রান্ত। যদিও মিয়ানমার অস্বীকার করেছে, তারপরেও বলব, যদি মিয়ানমার বর্ডার থেকে এসে ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালানো হয় তাহলে সেটি গ্রহণযোগ্য হবে না। কিন্তু সেই অছিলায় ভারত যদি কোনো মিলিটারি এ্যাডভেঞ্চার করতে চায় তাহলে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়া যুদ্ধের ময়দানে পরিণত হবে। বলা হয় যে, নরেন্দ্র মোদি হৃদয়ে নাকি বদলে যাচ্ছেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে যে, একজন বিশ্ব নেতা হওয়ার জন্য নরেন্দ্র মোদি কঠোর থেকে কঠোরতর হচ্ছেন।
Email: asifarsalan15@gmail.com
No comments:
Post a Comment