Monday, May 25, 2015

ব্লগার হত্যাকান্ডে হেফাজতকে জড়ানোর অপচেষ্টার তীব্র প্রতিবাদ ধর্মবিশ্বাস নিয়ে ব্যঙ্গ করা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নয় -আল্লামা শফী

ব্লগার হত্যাকান্ডে হেফাজতকে জড়ানোর অপচেষ্টার তীব্র প্রতিবাদ
ধর্মবিশ্বাস নিয়ে ব্যঙ্গ করা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নয় -আল্লামা শফী
'হেফাজতের তালিকাভুক্ত ব্লগাররাই জঙ্গিদের হিটলিস্টে', এমন মন্তব্য করে বাংলা ট্রিবিউনসহ কতিপয় মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্লগার হত্যাকান্ডের সাথে হেফাজতে ইসলামকে জড়ানোর অপপ্রয়াস লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে উল্লেখ করে এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের আমীর দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফী। 
তিনি বলেন, ধর্ম অবমাননা ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে সমান কঠোরতা জরুরি। কারো ধর্মবিশ্বাস নিয়ে ব্যঙ্গ করা কোন অবস্থাতেই মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নয়। হেফাজতে ইসলাম সকল বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের নিন্দা করে।
গতকাল রোববার এক বিবৃতিতে হেফাজত আমীর বলেন, ২০১৩ সালের ৩১ মার্চ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের গঠিত ৯ সদস্যের তদন্ত কমিটিকে যে ৮৪ জন ব্লগারের তালিকা দেওয়া হয়, তা মাসিক আল-বাইয়্যিনাত ও দৈনিক আল-ইহসান পত্রিকার সম্পাদক এবং আনজুমানে আল-বাইয়্যিনাত-এর কেন্দ্রীয় আহবায়ক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম আরিফ এর নেতৃত্বে দেয়া হয়েছিল। তিনি হেফাজতে ইসলামের কেউ নন এবং উক্ত বৈঠকে হেফাজতের কোন নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেননি। প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিকসহ প্রায় সকল গণমাধ্যমে সংবাদটি প্রকাশিত হয়েছিল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে ৮৪ জন ব্লগারের তালিকা হেফাজত দিয়েছিল বলে যে সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তক্যবাদি ও তাদের দোসররাই এমন মিথ্যাচারে জড়িত থাকতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
বিবৃতিতে হেফাজত আমীর আরো বলেন, আমাদের ১৩ দফার মধ্যে অন্যতম দাবি ছিল, ধর্ম অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন পাস এবং সে আইনের আওতায় বিচারের মাধ্যমে তাদের শাস্তি দেওয়া। যাতে কেউ কোন সম্প্রদায় বা ব্যক্তি বিশেষের অনুভুতিতে আঘাত হেনে দেশ ও সমাজে শান্তি বিনষ্ট করার অপপ্রয়াস চালাতে না পারে। তিনি বলেন, বর্তমানে কতিপয় মহল থেকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলা হয়ে থাকে। কিন্তু মতপ্রকাশের স্বাধীনতারও একটা সীমা আছে। অন্যের ধর্মবিশ্বাসকে কেউ হেয় করতে পারে না। অন্যের ধর্মবিশ্বাস নিয়ে মশকরা করা যায় না। কারো ধর্মবিশ্বাস নিয়ে ব্যঙ্গ করা কোন অবস্থাতেই মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নয়। কেউ যদি কারো মাকে গালি দেয়, কারো বোনকে গালি দেয়, অবশ্যই এতে কঠোর প্রতিক্রিয়া তৈরি হবে। তাই আমরা দেশের শান্তি-শৃঙ্খলার স্বার্থে বার বার দাবি জানিয়ে আসছি যে, কেউ যাতে অন্যের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনে সহিংস কর্মকা-ে কাউকে প্ররোচিত না করতে পারে, তার জন্য কঠোর আইন থাকা দরকার।
বিবৃতিতে হেফাজত আমীর আরো বলেন, হেফাজতে ইসলামসহ এদেশের উলামা-মাশায়েখ, ক্বওমী মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকরা শান্তিতে বিশ্বাসী। কারণ, ইসলাম আমাদেরকে শান্তি, সাম্য, সহনশীলতা ও ইনসাফের শিক্ষা দেয়। আমরা কখনোই আইনকে নিজের হাতে তুলে নেওয়া বা কোন ধরনের বিচারবহির্ভূত সহিংস কর্মকা- সমর্থন করি না। হেফাজতে ইসলাম খুন, গুম, অপহরণসহ সকল বিচারবহিভর্'ত হত্যাকা-ের নিন্দা করে। আমরা সব সময় জনসাধারণকে অন্যায়, অপরাধ, জোর-জুলুম ও সহিংস কর্মকা- থেকে বিরত থাকার প্রতি আহ্বান জানাই। আমরা চাই, ব্লগার হত্যাসহ সব ধরনের বিচারবহির্ভুত সহিংসতা ও হত্যাকা-ের নিরপেক্ষ তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদেরকে আইনের আওতায় আনা হোক। পাশাপাশি কেউ যাতে বাক স্বাধীনতার অপব্যবহার করে ইসলামের বিরুদ্ধে কটূক্তি করে সহিংস কর্মকা-ে অন্যকে প্ররোচিত করতে না পারে, সেই লক্ষ্যে কঠোর শাস্তির বিধান রেখে আইন পাস করা হোক। সহিংসতায় জড়িতদের বিরুদ্ধে যেমন কঠোর আইনি পদক্ষেপ প্রয়োজন, তেমনি অন্যের ধর্মীয় আবেগ-অনুভূতিতে আঘাত হেনে সহিংসতায় উস্কানীদাতাদের বিরুদ্ধেও সমান কঠোরতা জরুরি। হেফাজত আমীর ইসলাম অবমাননাকারী ব্লগারদেরকে কতিপয় মিডিয়ায় বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ও মুক্তমনা বলে পরিচিত করার প্রয়াসের উল্লেখ করে বলেন, এটাও ধর্ম অবমাননাকারীদেরকে প্ররোচিত করার শামিল। তিনি বলেন, দেশের শান্তি-শৃঙ্খলার স্বার্থে সরকারকে এসব বিষয়ে সতর্ক ও বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে।

__._,_.___

Posted by: Shah Abdul Hannan <shah_abdul_hannan@yahoo.com>

No comments:

Post a Comment